সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তার সরকারী বাসভবন গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে তিনি এই ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবনির্মিত সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ১০২টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিতকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সম্পর্কিত দু’টি প্রকল্পেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।’
এর আগে তিনি বিদ্যুৎভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ২০০৯ সালের চেয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪ গুণ বেড়ে এখন ২০ হাজার ৪৩০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত ৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ১০২ উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যক্রম শতভাগে উন্নীতকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন এবং দু’টি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ৯২ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছেন, যা ২০০৯ সালের পূর্বে মাত্র ৪৭ শতাংশ ছিল। আমরা একই সময়ে ২ কোটি ৩ লাখ গ্রাহকের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছি।’
সরকার ৫৩ লাখ সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে দুই কোটিরও বেশি মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে ১৩ হাজার ৬৫৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৫৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এছাড়া ৭ হাজার ৪৬১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরো ২৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য টেন্ডার াাহ্বানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সরকার ২০ হাজার ১৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাস্পন্ন ১৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনেরও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ১০২টি উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় নিয়ে আসছে।’
যেসব জেলা শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে সেগুলো হচ্ছে : নবাবগঞ্জ, দোহার, কাশিয়ানী, মুকসেদপুর, গোপালগঞ্জ সদর, মিঠামইন, তাড়াইল, ইটনা, হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ সদর, বাজিতপুর, শ্রীমঙ্গল, নাটোর সদর, নলডাঙ্গা, গুরুদাসপুর, পুঠিয়া, চারঘাট, বাঘা, তানোর, চিতলমারী, চৌগাছা, চুয়াডাঙ্গা, ঝিকরগাছা, কেশবপুর, জীবননগর, দামুরহুদা, পিরোজপুর সদর, হরিরামপুর, সাটুরিয়া, ঘিওর, আত্রাই, মহাদেবপুর, রাণীনগর, নিয়ামতপুর, ঝালকাঠি সদর, রাজাপুর, পাবনা সদর, বিশ্বনাথ, গোলাপগঞ্জ, জৈন্তাপুর, বালাগঞ্জ, ডুমুরিয়া, ফেনী সদর, কুষ্টিয়া সদর, কুমারখালী, ফুলবাড়ী, কাহারুল, রামগঞ্জ, রাঙ্গুনিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, আনোয়ারা, বিজয়নগর, কসবা, বাঞ্চারামপুর, চান্দিনা, ব্রাহ্মণপাড়া, লালমাই, তিতাস, মেঘনা, হোমনা, দাউদকান্দি, নাঙ্গলকোট, বুড়িচং, লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম, চাটখিল, সোনাইমুড়ি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, তারাগঞ্জ, রংপুর সদর, তালা, কক্সবাজার সদর, টেকনাফ,গাংনী,দৌলতখান, তজুমুদ্দিন, সিরাজগঞ্জ সদর, রায়গঞ্জ, তাড়াশ, চৌহালী, মাদারীপুর সদর, নীলফামারী সদর, কালীগঞ্জ, কালিয়াকৈর, শরীয়তপুর সদর, ডামুড্যা, চাঁদপুর সদর, শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ, হাইমচর, সোনারগাঁ, নন্দীগ্রাম, সোনাতলা, দুপচাঁচিয়া, বগুড়া সদর, কাহালু, আদমদীঘি, শাহজাহানপুর, চরভদ্রাসন, আলফাডাঙ্গা, মাগুরা সদর ও শ্রীপুর।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে প্রত্যেক গৃহে বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকার একটি পরিকল্পনা নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নসরুল বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার লক্ষ্যে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম,বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ ও পাওয়ার সেল-এর মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন এতে উপস্থিত ছিলেন।