আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দল বা জোটকে সমর্থন দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির আমির আল্লামা আহমদ শফী।
হেফাজতের এই অবস্থান নিয়ে বৃহৎ দুই রাজনৈতিক জোট খুবই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। হেফাজত আমিরের ওই বক্তব্যের বিষয়ে দুই দলের মন্তব্যও বেশ সতর্ক। তবে সংগঠনটির সিদ্ধান্ত আসলে কী হবে, তা নির্বাচন এগিয়ে এলে বোঝা যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নির্বাচনের বিষয়ে হেফাজত নেতাদের মন্তব্য জানতে চাইলে তারা জানান, নির্বাচনসহ বিভিন্ন সময় সংগঠনকে একটা রাজনৈতিক চেহারা দেয়ার চেষ্টা তারা দেখেন, সে জন্য তারা তাদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। হেফাজতে ইসলামের আমির এক বিবৃতি দিয়ে এই সংগঠন এবার নির্বাচনে কোনো দল বা কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করছে না বলে জানিয়েছেন।
তবে সংগঠনটির বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, হেফাজতের মধ্যে ইসলামপন্থী ছোট ছোট যে দলগুলো রয়েছে; তাদের মধ্যে কয়েকটি দলের আওয়ামী লীগের সঙ্গে ও অন্য কয়েকটি বিএনপি সঙ্গে আসন ভাগাভাগির দরকষাকষি করছে।
হেফাজতের অবস্থান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, হেফাজত কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন। এর কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। তবে হেফাজতে ইসলামের নেতারা আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে এবং প্রধানমন্ত্রী তাদের যে স্বীকৃতি দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ইসলামের জন্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, নিশ্চয়ই আগামী নির্বাচনে তারা যখন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, তখন তারা এই বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন।
এ বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে হেফাজতের শীর্ষ নেতার এখনও সখ্য রয়েছে বলে তারা মনে করেন। এরপরও নির্বাচনের আগে হেফাজতের সঙ্গে নতুন করে একটা যোগাযোগ সৃষ্টির চেষ্টা তারা করতে পারেন।
আর হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মো. ফয়জুল্লাহ জানান, এটা নিশ্চিত যে, হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের কারণে অনেক দিকে পাল্লা ভারি হয়ে যায়। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের মূল সিদ্ধান্ত হচ্ছে, সাংগঠনিকভাবে তারা কোনো দল বা প্রার্থীকে সমর্থন করবে না। হেফাজতে ইসলামের কোনো দাবিদাওয়া যদি কেউ মেনে নেয় বা পূরণ করে,সেক্ষেত্রে একটা কৃতিত্ব তো তারা পাবেনই। এটা অস্বাভাবিক নয়।
তবে হেফাজতের গন্তব্য শেষ পর্যন্ত কী হবে তা দেখতে আরও অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাসরিন সুলতানা বলেন, প্রধান দলগুলো এখন হেফাজতের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করছে। নির্বাচন আরও এগিয়ে এলে হেফাজতের চেহারা কী হয়, সেটা দেখার বিষয়।
বিবিসি বাংলা