জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনকে রাজাকার বলেছেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম’ আয়োজিত এক আলোচনায় এই মন্তব্য করেন এই বিচারপতি।
যুক্তি হিসেবে মানিক বলেন, ‘১৯৭১ সালে ড. কামাল হোসেন দেশে ছিলেন না। ২০০৮ সালে একটি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৮ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানের মেজর জেনারেল মির্ছা খানকে ফোন করে (কামাল হোসেন) দেশ থেকে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। ২৯ মার্চ ডিভিশনাল হেড কোয়াটার থেকে কামাল হোসেনকে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেন ওই মেজর জেনারেল। পরে পাকিস্তান থেকে ইয়াহিয়া খান ড. কামাল হোসেনকে দেশে পাঠান। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেয়া। আর এই ফাঁসি দেয়ার ষড়যন্ত্র পূর্ণাঙ্গ করতে সাক্ষী হিসেবে বেছে নেয়া হয় ড. কামাল হোসেনকে।’
মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় ড. কামাল হোসেন ছিলেন পাকিস্তানে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে বিমানে করে দেশে ফেরেন একই বিমানে ছিলেন ড. কামালও। দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু তাকে প্রধান করেই সংবিধান প্রণয়ন কমিটি করেন। প্রথমে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী এবং পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয় ড. কামালকে।
বিচারপতি মানিক বলেন, ‘এইএসআই একটি করিৎকর্মা গোয়েন্দা সংস্থা। যখন বঙ্গবন্ধুকে তারা দেশে পাঠায়ে দেয়, তখন একই প্লেনে কামাল হোসেনকে উঠিয়ে দেয়া হয়। এই হচ্ছে কামাল হোসেনের ইতিহাস। উনি একজন রাজাকার, সোজা কথা ড. কামাল হোসেন একজন রাজাকার।’
কামাল হোসেনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ছেদ হয় ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর। তিনি গঠন করেন গণফোরাম। রাজনীতিতে কিছু করতে না পারলেও সম্প্রতি তিনি আলোচনায় এসেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করে। এই ফ্রন্টে বিএনপি প্রধান দল হলেও প্রধান নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন ড. কামালই।
বিচারপতি মানিক বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন আজ কাদের সাথে আঁতাত করেছে? মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের সাথে আঁতাত করছেন। আমি আশ্চর্য হইনি এই জন্য যে কামাল সাহেব তো তাদেরই একজন।’
আলোচনায় যোগ দেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি হারুন হাবীব, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি শফিকুর রহমান, সম্মিলিত সংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, লেখক ও সাংবাদিক সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিন্নাত হুদা, লেখক ও সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার উত্থান ১৯৭৫ সালে মেজর জিয়া ক্ষমতা গ্রহণের পর। আর এই সাম্প্রদায়িকতার কারণে ২০০১ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর বিভিন্ন রকম দুর্যোগ নেমে এসেছে।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমি সাধারণ মানুষ। আমি নিজে সরাসরি দুটি যুদ্ধ করেছি। জিয়ার নেতৃত্বে একটি যুদ্ধও হয়নি। জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করতে হবে। তাহলেই সব সত্য বেড়িয়ে আসবে।’
দেশের একটি নির্দিষ্ট শিক্ষিত মহল দেশে বিভাজনের সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে ইসতিয়াক রেজা বলেন, ‘ওই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী খুব ভয়ংকর। এরা সমাজকে বিভাজিত করার চেষ্টা করছে। সাম্প্রদায়িকরা এখন বিভিন্ন পেশায় ঢুকে পরেছে।’
ঢাকাটাইমস