Home » Featured » জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল

জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়।

সোমবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ সারাবাংলাকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর আওতায় রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে দলটিতে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর ইসি নিবন্ধন দেয়। জামায়াতে ইসলামির নিবন্ধন নম্বর ১৪। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের দায়ের করা ৬৩০ নম্বর রিট পিটিশনের রায়ে আদালত জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে।

আদালত দলটির নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করায় ইসির গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ এইচ ধারা অনুযায়ী রোববার (২৮ অক্টোবর) নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

ফলে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে তারা আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে অন্য দলের প্রতীকে বা স্বতন্ত্রভাবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে।

ইসি সূত্র জানায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হয়। সংশোধনী আরপিওতে রাজনৈতিক দলগুলোকে ইসিতে নিবন্ধন করার বিধান যুক্ত করা হয়। যেখানে বলা হয়, ইসিতে কোনো দল নিবন্ধিত না হলে ওই দল দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারবে না। একইসঙ্গে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে, নিবন্ধন পেতে একটি দলকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনো নির্বাচনে অন্তত একটি সংসদীয় আসন পেতে হবে অথবা যেকোনো একটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ওই আসনে প্রদত্ত মোট ভোটের ৫ শতাংশ পেতে হবে।

আরপিওতে বলা হয়েছে, দলের একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে, দেশের অন্তত এক তৃতীয়াংশ (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা কমিটি এবং কমপক্ষে ১শ’ উপজেলা/মহানগর থানায় ন্যূনতম ২শ’ ভোটারের সমর্থনের প্রামাণিক দলিল থাকতে হবে। ইসির এসব শর্ত পূরণ করায় ২০০৮ সালে ৪২টি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। তার মধ্যে ইসির নিবন্ধন শর্ত ভঙ্গ করায় ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এর আগে গত ৪ অক্টোবর কাজী ফারুকের ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। সর্বশেষ ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এর ফলে বর্তমানে ইসির নিবন্ধতিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৯টি।

ইসি’তে বর্তমানে নিবন্ধিত দল ৩৯টি। এগুলো হলো, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্ট-বিজেপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক দল-জাগপা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পাটি-বাংলাদেশ ন্যাপ, খেলাফত মজলিশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল-এমএল, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি-জেপি ও জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট- (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টি, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, ঐক্যবন্ধ নাগরিক আন্দোলন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি), গণফ্রন্ট, গণফোরাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জাকের পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, কৃষিক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী ফ্রন্ট।

ইসির প্রজ্ঞাপনটি নিচে দেওয়া হলো: